“আমারা গোমতী নদীর উপর দিয়ে জাহাজ পরিবহনের যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেটা শীঘ্রই সফল হবে”। আজ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব। তিনি বলেন ভারত বাংলাদেশের মধ্যে এক ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। মহামারীর মধ্যেও এই চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তিন-চার মাসের মধ্যেই পরীক্ষামূলক ভাবে জাহাজ চলাচল করবে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের সচিব সঞ্জীব রঞ্জন, মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন যে তিন মাসের মধ্যে একটি অস্থায়ী জেঠি তৈরি করা হবে সোনামুড়ায়। এরপর শুখা মরসুমে গোমতী নদীর ড্রেজিং করা হবে। যার মাধ্যমে বছরজুড়ে জাহাজের আসা-যাওয়া অব্যাহত থাকবে।
ন্যুনতম ৫০ টন ওজনের পণ্য নিয়ে জাহাজ চলাচল করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন যে এই ৯৩ কিলোমিটার রুটের মধ্যে রয়েছে ২৩ টি সেতু, যা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ড্রেজিং হয়ে গেলে সেই সমস্যা থাকবে না বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সম্প্রতি ঢাকায় এক ঐতিহাসিক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে স্বীকৃতি পায় সোনামুড়া ও দাউদকান্দির মধ্যেকার প্রটোকল রুট।এর ফলে ইন্দো-বাংলাদেশ প্রটোকল (আইবিপি) রুটের সংখ্যা ৮ থেকে বাড়িয়ে ১০ করা হচ্ছে এবং বিদ্যমান রুটে নতুন স্থানও যুক্ত করা হয়েছে। এতে প্রথমেই গোমতী নদীর সোনামুড়া-দাউদকান্দি (৯৩ কিমি) আইবিপির ৯ম ও ১০ম রুট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি ত্রিপুরা এবং সংলগ্ন রাজ্যগুলির সাথে ভারত-বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলির যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে এবং উভয় দেশের নদী-দূরবর্তী অঞ্চলেও সহায়তা করবে। এই রুটটি ১ থেকে ৮ পর্যন্ত বিদ্যমান সকল আইবিপি রুটকে সংযুক্ত করবে।
বর্তমান প্রটোকলের অধীনে বিদ্যমান ছয়টি পোর্ট অফ কল হলোঃ ভারতের কলকাতা, হলদিয়া, করিমগঞ্জ, পাণ্ডু, শিলঘাট এবং ধুবড়ি। বাংলাদেশের পক্ষে নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, মংলা, সিরাজগঞ্জ, আশুগঞ্জ ও পানগাঁও। এদিন স্বাক্ষরে ভারতের পক্ষ থেকে নতুন যুক্ত হওয়া পাঁচটি বন্দর হলো ধুলিয়ান, মাইয়া, কোলাঘাট, সোনামুড়া এবং যোগিগোফা। আর বাংলাদেশের বন্দরগুলো হলো রাজশাহী, সুলতানগঞ্জ, চিলমারী, দাউদকান্দি এবং বাহাদুরাবাদ। এছাড়াও, এই সংযোজনের মাধ্যমে ভারতের ত্রিবেলি (ব্যান্ডেল) ও বদরপুর এবং বাংলাদেশের ঘোড়াশাল ও মুক্তারপুর এই দু’টি বন্দর সম্প্রসারণের ফলে দুই দেশের পোর্ট অফ কলও সম্প্রসারিত হল। পোর্ট অফ কলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এগারটি ও দুইটিতে। এই ঐতিহাসিক চুক্তির ফলে দারুণ ভাবে উপকৃত হবে ত্রিপুরা।