আগরতলা, ১৬ আগস্ট: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং এক্ট ইস্ট পলিসির কারণে ধীরে ধীরে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য সহ ত্রিপুরা দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামীতে ত্রিপুরার চেহারা আমূল বদলে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর জন্য ত্রিপুরায় রেল যোগাযোগ উন্নয়ন থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, গরীব মানুষের কল্যাণ ইত্যাদি জনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে।
বুধবার শ্রীকৃষ্ণ মিশন স্কুল সংলগ্ন রানীরপুকুর পার্কে বড়জলা মহিলা মোর্চার পক্ষ থেকে আজাদি কা অমৃত উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত ‘মেরি মাটি, মেরা দেশ’ শীর্ষক কর্মসূচিতে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
প্রদীপ জ্বালিয়ে এদিন অনুষ্ঠানের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত বছর ত্রিপুরায় প্রধানমন্ত্রী মোদির হার ঘর তিরঙ্গা উদযাপনের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ত্রিপুরার এই কর্মসূচি সফলভাবে রূপায়িত হওয়ায় দেশব্যাপী প্রশংসা অর্জন করেছে। এজন্য বাইরে থেকে অনেক ফোন কলও এসেছে। এবারও যখন প্রধানমন্ত্রী মোদি হার ঘর তিরঙ্গার জন্য আহ্বান রেখেছিলেন তখন একে রূপায়নের জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এই কর্মসূচি ফের একবার দুর্দান্ত সাফল্য এনে দিয়েছে। এর পাশাপাশি আমরা ‘৭৫ সীমান্ত গ্রাম, ক্রান্তি বীরো কা নাম’ কর্মসূচির আয়োজন করেছি। ত্রিপুরায় এমন কয়েকটি গ্রাম রয়েছে যেখানে বহু মানুষ স্বাধীনতার জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাই সরকার তাদের আত্মত্যাগের জন্য তাদের পরিবার পরিজনদের সম্মানিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কারণই এসব কর্মসূচি করা সম্ভব হয়েছে। যা অতীতে করা সম্ভব হয় নি।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদির অ্যাক্ট ইস্ট নীতির কারণ উত্তর-পূর্বে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। যদিও এই গোটা অঞ্চল আগে ব্যাপকভাবে অবহেলিত ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদির সদর্থক চিন্তাভাবনার জন্য এই সমগ্র এলাকায় এখন অসাধারণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। আমাদের কাছে এখন ব্রডগেজ রেল সংযোগ, এক্সপ্রেস ট্রেন এবং ৬টি জাতীয় মহাসড়ক রয়েছে – যার কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হওয়ার পথে। এছাড়া পরিকল্পনা অনুযায়ী আরো চারটি জাতীয় সড়ক গড়ে তোলা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় এখন একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর স্থাপিত হয়েছে। যা উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম সুন্দর বিমানবন্দর হয়ে উঠেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবছরই বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা চালু হবে। নৌপথেও যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চলছে। সাব্রুমের মৈত্রী সেতু খুব সহসাই চালু হয়ে যাবে। এতে ত্রিপুরা হয়ে উঠবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম প্রবেশ দুয়ার। এতে ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য আরো বৃদ্ধি পাবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, অতীতে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির মধ্যে সীমান্ত বিরোধ এবং সংহতির অভাব পরিলক্ষিত হতো। এতে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। কিন্তু এখন আর সেটা নেই। যদিও কিছু প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি এই অঞ্চলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। কিন্তু আমাদের কাছে একটি সমাধান রয়েছে। আমাদের কাছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো অভিভাবক রয়েছেন। তিনি জাতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছেন। বিদেশেও প্রধানমন্ত্রীকে খুবই শ্রদ্ধা ও সম্মান করা হয়। আমরা তাতে গর্ববোধ করি। তিনি দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণ পাকিস্তান ও চীনের মতো দেশগুলির হুমকি কমে গেছে। কারণ নিরাপত্তা না থাকলে উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতি এখন উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এদিন অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, প্রাক্তন বিধায়ক ডা: দিলীপ দাস, বড়জলা মন্ডলের সভাপতি মুকুল রায় সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব।