আগরতলা, ২৩ জুলাই: গ্রামীণ এলাকার উন্নয়ন না হলে কোন রাজ্য বা দেশের উন্নয়ন হয় না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই দিশায় কাজ করে যাচ্ছেন। রাজ্য সরকারও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত পথে কাজ করছে। গ্রামীণ এলাকার প্রতিটি বিষয় নিয়ে যথেষ্ট সচেতন কেন্দ্রীয় সরকার। কৃষকদের আর্থিক মানোন্নয়ন সহ সব ক্ষেত্রেই উন্নতি ঘটানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে। গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে ইঞ্জিনিয়ারদের একটা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারদের বিশ্বকর্মাও বলা হয়। রবিবার আগরতলার সুকান্ত একাডেমি অডিটোরিয়ামে এসোসিয়েশন অফ সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার অফ ত্রিপুরার ( ASSET) উদ্যোগে আয়োজিত স্বেচ্ছা রক্তদান শিবির ও দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
এই কর্মসূচির উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সব জায়গাতেই ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকা অপরিসীম। সব ক্ষেত্রেই ইঞ্জিনি়য়ারিংয়ের অবদান অনস্বীকার্য। ইঞ্জিনিয়ারদের কারণে ত্রিপুরা অগ্রগতির লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে। বিশেষ করে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা খুবই উল্লেখযোগ্য। সময়ের সাথে সাথে ইঞ্জিনি়য়ারিংয়ের ক্ষেত্রেও অনেক নতুন বিষয় যুক্ত হয়েছে। আগে শুধু সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের কথা জানতো মানুষ। আর এখন আইটি ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার সহ সব ক্ষেত্রেই ইঞ্জিনি়য়ারিংয়ের অবদান রয়েছে। কথা বলার মাইক্রোফোন থেকে শুরু করে বিল্ডিং তৈরি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইঞ্জিনি়য়ারিং যুক্ত রয়েছে। মানুষের কল্যাণে, সমাজের কল্যাণে এবং দেশের কল্যাণে নীরবে কাজ করে যাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়াররা। অনেক দিন বাদে সরকার ইঞ্জিনিয়ারদের প্রমোশন দিয়েছে। আগামীতেও ধাপে ধাপে এই প্রক্রিয়া জারি থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এরমধ্যে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের খাতে প্রায় ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নের জন্যও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ রাজ্যের প্রায় চার ভাগের তিনভাগই গ্রামীণ এলাকায় পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা বলেন, আগে এধরণের সভা বা সম্মেলনে আগে থেকে দাবিসনদ প্রস্তুত করে সেটা দপ্তরের মন্ত্রীদের পেশ করা হতো। সম্মেলনের আসল উদ্দেশ্যই থাকতো দাবি দাওয়া। কিন্তু বর্তমান সরকার দাবিদাওয়া পেশ করার আগেই সেটা পূরন করে দেয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ দর্শনে এই সরকার কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রীর এক্ট ইস্ট পলিসির মাধ্যমে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি খুব দ্রুত বিকাশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আর সেখানেও ইঞ্জিনিয়ারদের হাত রয়েছে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে উন্নয়নের সবক্ষেত্রেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছোঁয়া রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ইঞ্জিনিয়ারদের ছাড়া দেশ কখনো এগিয়ে যাবে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ইঞ্জিনিয়ারিংকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছেন। এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়াও ইঞ্জিনিয়ারদের ছাড়া কখনো সম্ভব নয়। ইঞ্জিনিয়াররা আছেন বলেই রাজ্য সরকার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথা ভাবে। অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছা রক্তদানের প্রাসঙ্গিকতাও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রক্তদান একটি মহৎ দান। এই দানের বিকল্প হয় না। তাই মুমূর্ষু মানুষের জীবন রক্ষার জন্য আরো বেশি করে স্বেচ্ছা রক্তদান করার আহ্বান জানান তিনি।
এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী রাজীব ভট্টাচার্য, আয়োজক ইঞ্জিনিয়ার সংগঠনের সভাপতি মিহির কান্তি গোপ, সাধারণ সম্পাদক সনু রঞ্জন দেববর্মা সহ সংগঠনের অন্যান্য পদাধিকারীগণ। অনুষ্ঠানে রক্তদান শিবির ঘুরে দেখে রক্তদাতাদের উৎসাহিত করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ।