আগরতলা, ১ আগস্ট: রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবার সার্বিক পরিকাঠামোর উন্নয়নে খুবই আন্তরিক বর্তমান রাজ্য সরকার। এবার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আগের তুলনায় বাজেটও অনেক বাড়ানো হয়েছে। বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে এবার ১ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। নতুন করে প্রায় ১০০টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তুলতে বাজেটে আর্থিক সংস্থান রাখা হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে দুটি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। বেসরকারিভাবে ধলাই জেলার আমবাসায় আরো একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য মৌ স্বাক্ষর হয়েছে। সবমিলিয়ে ত্রিপুরায় একটি স্বাস্থ্য হাব গড়ে তোলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার আগরতলার আইজিএম হাসপাতাল কমপ্লেক্সে আগরতলা সরকারি নার্সিং কলেজের শুভ সূচনা করে একথা গুরুত্বের সঙ্গে বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। নিঃসন্দেহে ১লা আগস্ট, ২০২৩ দিনটি রাজ্যের জন্য আরো একটি স্মরণীয় হয়ে থাকলো। নার্সিং শিক্ষায় পড়তে ইচ্ছুক রাজ্যের ছেলেমেয়েদের স্বপ্ন পূরণে একটি উল্লেখযোগ্য মাইল ফলক হয়ে থাকলো আগরতলা গভর্মেন্ট নার্সিং কলেজ। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে সরকারিভাবে শুরু হতে যাচ্ছে বিএসসি নার্সিং কোর্স।
আইজিএম হাসপাতালের বহুতল ভবনে গড়ে তোলা হয়েছে রাজ্যের ছেলেমেয়েদের স্বপ্নের এই প্রতিষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি স্বাস্থ্যই সম্পদ। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিকাঠামোর সমস্ত কিছু উন্নয়নের জন্য কাজ করে চলছে। বর্তমানে রাজ্যে দুটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে। বেসরকারিভাবে আরো একটি মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলার জন্য প্রক্রিয়া চলছে। ধলাই জেলার আমবাসায় শুরু হতে যাওয়া এই মেডিকেল কলেজের জন্য ইতিমধ্যে মৌ স্বাক্ষর হয়েছে। ডেন্টাল কলেজে এবছর থেকে ছাত্রছাত্রী ভর্তি এবং ক্লাশ শুরু করা হবে। এবার আইজিএম চত্বরে নার্সিং কলেজ উদ্বোধন হলো। রাজ্যে স্বাস্থ্যের হাব তৈরি হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা বলেন, আগে মেডিকেল পড়তে হলে বাইরে যেতে হতো। আর এখন রাজ্যের মধ্যে সেই সুযোগ রয়েছে। বিএসসি নার্সিংয়ে সুযোগ পাওয়া ছিল একটা বিশাল ব্যাপার। আগামীতে হয়তো এই নার্সিং কলেজ থেকে এমএসসি নার্সিং পড়ার সুযোগ হতে পারে। এতে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও অনেক সুবিধা হবে। রাজ্য সরকার এবং স্বাস্থ্য দপ্তর সেই দিশা নিয়ে কাজ করছে। ডেন্টাল কলেজে প্রায় ৫০ জন ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করতে পারবে। নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের কোঠায় ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির সুযোগ পাবে এখানে। অনুরূপভাবে নার্সিং কলেজেও ৫০টি আসন থাকবে। ২০২৩ – ২৪ অর্থবর্ষে গোমতী জেলার এএনএম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটকে জিএনএমে (৪০টি আসন) রূপান্তরিত করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এজিএমসিতে পিজি অর্থাৎ স্নাতকোত্তর স্তরে ২৫টি থেকে বাড়িয়ে ৭৯টি আসন করা হয়েছে। এই রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলি বাইরের কলেজের চাইতে কোন অংশে কম নয়। এগুলির পরিকাঠামো আরো উন্নয়নের জন্য লাগাতর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। এর পাশাপাশি হাসপাতালে রোগীদের কথা মাথায় রেখে জায়গা সংকুলান সহ অন্যান্য পরিকাঠামোর উপর নজর দেওয়া হয়েছে। ডা: সাহা আরো জানান, রাজ্য সরকার পানিসাগর, কুমারঘাট এবং করবুকে থাকা তিনটি কমিউনিটি হেলথ সেন্টারকে মহকুমা হাসপাতালে উন্নীত করেছে। দক্ষিণ জেলা, ধলাই জেলা এবং গোমতী জেলা হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এবং অন্যান্য ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করা অনেকটা সুবিধা হয়েছে। লংতরাই ভ্যালি মহকুমা হাসপাতালে নতুন ভবন তৈরি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আরো অনেক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সিএইচসিতে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া ৬টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হয়।